মাসুদ আলম: [২] আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মিয়ানমার সম্পর্কে আপনারা জানেন। সেখানে শুধু আরাকান আর্মিদের বিছিন্নতাবাদী নেই, বরং সেখানে কুকি-চিনসহ প্রায় ৩০টি গোষ্ঠী সব সময় সংঘর্ষে লিপ্ত। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সেখান থেকেই আসছে। সেখান থেকে আসার কারণে হয়ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের দু’চারজন অনুপ্রবেশ করেছে। এখানে কে নেতৃত্ব দেবে, সেটা নিয়েই সংঘর্ষ হচ্ছে। মিয়ানমারের বিছিন্নতাবাদীরা হত্যার ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে।

[৩] তিনি আরও বলেন, এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যাতে সীমান্তে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আমরা বর্ডার ফোর্সকে আরও শক্তিশালী করছি।

[৪] শুক্রবার রাজধানীর নটরডেম কলেজে উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

[৫] তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কিছু সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত রয়েছে, যেসব এলাকায় কোনো যাতায়াত নেই। নাফ নদীতে এমন কয়েকটি চরের মতো জায়গাও রয়েছে, যেখানে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের নো ম্যানস ল্যান্ড রয়েছে। সেখানে তারা অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। সেখানে তারা অহরহ যাতায়াত করছে। আমরা সেই জায়গাগুলোর জন্য নিরাপত্তা বাড়াচ্ছি।

[৬] আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা দুটি হেলিকপ্টার কিনেছি, সারা বর্ডারে সেন্সর লাগাচ্ছি। এ ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যবস্থা নিচ্ছি। যে সমস্যাই সামনে আসছে, সেটা মাথায় নিয়ে সমাধান করছি। আপনারা দেখেছেন, আমাদের একজন সৈনিককেও তারা হত্যা করেছে।

[৭] আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বীরের জাতি। অতীতে আমরা কোনো অন্যায় বা অপকর্ম মেনে নেইনি। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা বার বার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।  

[৮] সাঁওতালদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা দেশের সম্পদ। কারণ আপনারা বিদ্রোহ করতে জানেন, ঘুরে দাঁড়াতে জানেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে জানেন। আমাদের দেশের ছয়টি ঋতুর মতো বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা একসঙ্গে বসবাস করছি।  সাঁওতাল বিদ্রোহের সময় যোদ্ধারা কখনো ইংরেজদের বন্দুক বা গুলির ভয় করেনি। 

[৯] তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এ দেশ সবার। আমরা তার ডাকে সবাই সাড়া দিয়েছিলাম। স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু ঘাতকরা তাকে হত্যা করেছিলো। 

[১০] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, সব দাবি প্রধানমন্ত্রী জানেন এবং সেগুলো পূরণে কাজ করছেন। প্রাথমিক শিক্ষা যার যার বর্ণমালা ও ভাষায় হবে। সেই সিদ্ধান্ত নীতিগতভাবে নেওয়া হয়েছে। ভূমির প্রকৃত মালিকরাই ভূমির মালিকানায় থাকবে, সেই ভূমিনীতিই আমরা করছি। সাঁওতালদের জন্য আলাদা ভূমি কমিশনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে থাকবেন। 

[১১] তিনি আরও বলেন, আমরা ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হচ্ছি। এ যাত্রায় সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সবাই বাঙালি। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব